ডেস্ক রিপোর্ট
দালাই লামার উত্তরসূরি নির্ধারণ ইস্যুকে চীন-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে একটি “সংবেদনশীল ও কাঁটার মতো বিষয়” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে চীনা দূতাবাস। এমন মন্তব্য এসেছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চীন সফরের প্রাক্কালে, যা ২০২০ সালের গালওয়ান সীমান্ত সংঘর্ষের পর প্রথমবারের মতো দুই দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছে।
চীনের দাবি, দালাই লামার উত্তরসূরি নির্ধারণ সম্পূর্ণভাবে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এতে বাইরের কোনো হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়। চীনের মতে, ভারত যদি তিব্বত বিষয়ক কোনো রাজনৈতিক অবস্থান নেয় অথবা দালাই লামার প্রস্তাবিত উত্তরসূরিকে সমর্থন করে, তবে তা দুই দেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
চীনা দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে,
“দালাই লামার উত্তরসূরি ইস্যু চীন-ভারত সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বাধা হিসেবে রয়ে গেছে। এই বিষয়ে ভারতের অবস্থান সতর্কভাবে বিবেচনা করা উচিত।”
ভারত এখনও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য না করলেও, অতীতে দেশটি দালাই লামাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়ে এসেছে এবং তিব্বতের ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সম্মান জানিয়ে এসেছে। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের আসন্ন সফরকে ঘিরে এই মন্তব্য দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সীমান্ত উত্তেজনা, বাণিজ্য বাধা ও আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তার নিয়ে চীন-ভারত সম্পর্ক বহু বছর ধরেই জটিল হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে দালাই লামা ও তিব্বত ইস্যুতে চীনের কঠোর অবস্থান এবং ভারতের ধর্মীয় ও মানবাধিকার সংবেদনশীলতা সংঘর্ষ সৃষ্টি করতে পারে।
২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘর্ষের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক অনেকটাই খারাপ হয়ে যায়। বর্তমান সফরকে তাই কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার একটি উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দালাই লামার উত্তরসূরি প্রশ্ন কেবল ধর্মীয় নেতৃত্ব সংক্রান্ত নয়, এটি একটি ভৌগোলিক ও কৌশলগত শক্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে। চীন চাইছে নিয়ন্ত্রণ, আর ভারত চায় নীতিগত অবস্থান বজায় রাখতে। এই দ্বন্দ্ব দুই দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।