পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পটুয়াখালীতে সদর উপজেলা বিএনপির এক নেতাকে মারধর ও তার টাকা-মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার পর এখন তাকে ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলার পেছনে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী নেতা মোঃ নজরুল ইসলাম হাওলাদার।
শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ তুলে ধরেন এবং নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নজরুল ইসলাম জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় একটি সন্ত্রাসী চক্র তাকে হয়রানি করে আসছে। তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোশাররফ হোসেনের ভগ্নিপতি মোঃ জাকির ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন সময়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করেছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “গত ১৫ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমি মোটরসাইকেলে শহরে যাচ্ছিলাম। পথে লোহালিয়া ইউনিয়নের কাঁকড়াবুনিয়া এলাকায় জাকির ও তার সন্ত্রাসীরা আমার পথরোধ করে। তারা আমাকে মোটরসাইকেল থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে এবং মাথায় সাবল দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে।”
তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা তার কাছে থাকা জমি কেনার জন্য রাখা নগদ ১ লাখ ৫১ হাজার টাকা এবং তার মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
হামলার পর স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সুস্থ হয়ে তিনি পটুয়াখালী সদর থানায় জাকিরসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
নজরুল ইসলামের অভিযোগ, মামলা দায়েরের পর থেকে অভিযুক্তরা তাকে ও তার ছেলেকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। তিনি বলেন, “তারা আমাকে বলছে, ‘বিএনপি ক্ষমতায় আসছে মনে করে মামলা করছিস? তোকে আর তোর পোলারে মেরে ফেলব’।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপদে বাঁচতে চাই। কিন্তু অভিযোগ দায়েরের পরও প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমি সরকারের কাছে আমার আকুল আবেদন, এই সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।”
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমলাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তুহিন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফারুক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোঃ নিজাম হাওলাদার এবং ভুক্তভোগীর ছেলে মোঃ আল-আমিন হাওলাদারসহ স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।