হট নিউজ ডিজিটাল ডেস্ক
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ঈদুল আজহার সময়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে কিছুটা উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় রিজার্ভ বেড়েছে ৩১.৮২ কোটি মার্কিন ডলার।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) প্রকাশিত হিসাব অনুসারে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত পদ্ধতিতে (বিপিএম৬) বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৯.৫২ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা তহবিলসহ মোট রিজার্ভের পরিমাণ ২৪.৭৮ বিলিয়ন ডলার।
এক সপ্তাহ আগে ১৩ জুন পর্যন্ত এই পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১৯.২০ বিলিয়ন ও ২৪.৫২ বিলিয়ন ডলার। তবে এই বৃদ্ধি সত্ত্বেও বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখনও চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে।
মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দায় মেটানোর পর রিজার্ভ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। সে সময় প্রকৃত বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি নেমে আসে, যা অর্থনীতিবিদদের মতে উদ্বেগজনক।
আইএমএফ কর্তৃক নির্ধারিত ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ১৪.৭৫ বিলিয়ন ডলার। বর্তমান অবস্থায় এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হলেও, দীর্ঘমেয়াদে রিজার্ভের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, কমপক্ষে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকা প্রয়োজন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ এই মাত্রার নিচে নেমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে।
সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে অপ্রয়োজনীয় আমদানি সীমিত করা, রপ্তানি বাড়ানো এবং প্রবাসী আয় বৃদ্ধির উদ্যোগ। তবে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ও জিওপলিটিক্যাল উত্তেজনার কারণে এই লক্ষ্য অর্জন করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হলে বাংলাদেশকে রপ্তানি বাণিজ্য বৈচিত্র্যকরণ, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির দিকে মনোযোগ দিতে হবে। পাশাপাশি, সরকারি ব্যয় সংকোচন ও আর্থিক শৃঙ্খলা জোরদার করাও জরুরি।