ডেস্ক রিপোর্ট
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ ছয় দিনের সরকারি সফরে চীনের তিনটি শহর পরিদর্শনে আজ সাংহাই পৌঁছেছেন। এই সফরকে দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক উত্তেজনা নিরসনের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনর্গঠন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যু গুরুত্ব পাবে।
অতীতের কয়েক বছরে অস্ট্রেলিয়া-চীন সম্পর্ক নানা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে গেছে। কোভিড-১৯ এর উৎপত্তি বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান, হংকং ও তাইওয়ান নিয়ে চীনের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান, এবং চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর অস্ট্রেলিয়ার নিষেধাজ্ঞার মতো বিষয়ে পারস্পরিক টানাপোড়েন তৈরি হয়। এই প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কূটনৈতিক সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচনের চেষ্টা চলছে।
প্রধানমন্ত্রী অ্যালবানিজের সফরে বাণিজ্যিক পুনঃসম্পর্ক স্থাপন, কৃষিপণ্য রপ্তানি ও খনিজসম্পদ নিয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার একাধিক রপ্তানি পণ্যের ওপর চীন পূর্বে শুল্ক আরোপ করেছিল, যার ফলে দুই দেশের মধ্যে কয়েক বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হয়। বর্তমানে এসব শুল্ক কমানো ও সরানো নিয়ে আলোচনা চলছে।
তবে শুধু অর্থনীতি নয়, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যু—বিশেষত দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সামরিক তৎপরতা, তাইওয়ান প্রণালীর উত্তেজনা এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে চীনা প্রভাব বৃদ্ধিও আলোচনায় স্থান পাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া মার্কিন নেতৃত্বাধীন কৌশলগত জোট AUKUS-এর সদস্য, যা চীনের দৃষ্টিতে হুমকি স্বরূপ বিবেচিত।
চীন ইতোমধ্যে সফরকে “সহযোগিতার নতুন অধ্যায়ের সূচনা” হিসেবে উল্লেখ করেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একাধিক ভিন্নমত এবং বিশ্বাসের জায়গা থাকায় সম্পর্ক উন্নয়নের পথে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।
এই সফর শুধু কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, বরং একটি কৌশলগত বার্তা—অস্ট্রেলিয়া ও চীন দুপক্ষই বুঝতে পারছে, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনর্গঠন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা ভারসাম্য বজায় রেখেই টেকসই কূটনৈতিক অগ্রগতি সম্ভব।